তেরখাদা উপজেলায় একটানা বৃষ্টিতে কাঁচা মরিচসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজির বাজারে লেগেছে অস্থিরতার ছোঁয়া। হঠাৎকরে কাঁচা মরিচের দাম আকাশচুম্বী হয়ে উঠেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। গত সপ্তাহে যেখানে কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়, সেখানে এখন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায়।
শুক্রবার (১১ জুলাই) দুপুরে কাটেঙ্গা বাজারে মরিচ কিনতে এসে চমকে যান দক্ষিণ পাড়ার বাসিন্দা খান সিরাজুল ইসলাম। ক্ষুব্ধ কণ্ঠে তিনি বলেন, সপ্তাহখানেক আগেও আধা কেজি মরিচ কিনেছি ২৫-৩০ টাকায়। এখন এক পোয়া কিনতেই ৭০ টাকা! এই দাম সাধারণ মানুষের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব না।
শুধু কাটেঙ্গা নয়, একই অবস্থা উপজেলার জয়সেনা ও তেরখাদা বাজারেও। কোথাও মরিচের কেজি ২৭০, কোথাও আবার ২৮০ টাকাও ছুঁয়েছে।
খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ কম থাকায় তারা বাধ্য হচ্ছেন বেশি দামে বিক্রি করতে।
কাটেঙ্গা বাজারের কাঁচামাল বিক্রেতা সিরাজ শেখ খুলনা গেজেটকে বলেন, বৃষ্টির কারণে কৃষকরা জমি থেকে মরিচ তুলতে পারছেন না। ফলে পাইকারির দামই দ্বিগুণ হয়ে গেছে।
পাইকারি ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেন, গত সপ্তাহে ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হওয়া মরিচ এখন পাইকারিতেই কিনতে হচ্ছে ২০০ টাকার ওপরে।
সবজির বাজারেও পড়েছে বৃষ্টির প্রভাব। বেগুন, ঢেঁড়স, করলা, পটোল, লাউসহ প্রায় সবজির দামই বেড়েছে ১০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত। এমনকি পেঁয়াজেও লেগেছে দামবৃদ্ধির হাওয়া— কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকা।
বাজারে আসা ক্রেতাদের অনেকেই অভিযোগ করছেন, প্রতিদিনই নতুন দামে পণ্য কিনতে হচ্ছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা দুষছেন সরবরাহ ঘাটতিকে।
এক বিক্রেতা বলেন, মাঠে পানি জমে থাকায় ঠিকভাবে পণ্য তুলতে পারছেন না কৃষকরা, আর তার খেসারত দিতে হচ্ছে আমাদের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জান্নাতুল আফরোজ স্বর্ণা খুলনা গেজেটকে বলেন, বাজার মনিটরিং নিয়মিত করা হচ্ছে। কেউ যদি অস্বাভাবিকভাবে পণ্যের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয়রা বলছেন, বৃষ্টির প্রকোপ না কমলে বাজারে এই অস্থিরতা সহজে কাটবে না। এমন অবস্থায় প্রশাসনের নজরদারি আরও জোরদার করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
খুলনা গেজেট/এএজে